আফগানিস্তানে বোমা হামলায় মন্ত্রী নিহত, দায় স্বীকার আইএস
- By N/A --
- 12 December, 2024
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলায় তালেবান সরকারের শরণার্থী বিষয়ক মন্ত্রী খলিল হাক্কানি নিহত হয়েছেন। ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের পর এটিই প্রথমবারের মতো শীর্ষ কোনো নেতা হামলায় নিহত হলেন।
স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার (১১ ডিসেম্বর) কাবুলে এ হামলা ঘটে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, খলিল হাক্কানি তার কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় আত্মঘাতী হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটান। এতে মন্ত্রীসহ মোট সাতজন প্রাণ হারান।
তালেবানের মুখপাত্র এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আইএসের বার্তা সংস্থা আমাক এক বিবৃতিতে জানায়, তাদের এক জঙ্গি তালেবান মন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়।
নিহত খলিল হাক্কানি তালেবানের একটি শক্তিশালী গোষ্ঠী হাক্কানি নেটওয়ার্কের শীর্ষ নেতা ছিলেন। হাক্কানি নেটওয়ার্ক দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তানে তালেবানের সশস্ত্র কার্যক্রমে মূল ভূমিকা পালন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খলিল হাক্কানিকে বৈশ্বিক সন্ত্রাসী হিসেবে ঘোষণা করেছিল।
হাক্কানির ভাই জালালুদ্দিন হাক্কানি ছিলেন এই নেটওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ১৯৮০–এর দশকে সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন। তালেবানের দুই দশকের বিদ্রোহের সময় হাক্কানি নেটওয়ার্ক অসংখ্য হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে। বর্তমানে জালালুদ্দিনের ছেলে সিরাজুদ্দিন হাক্কানি তালেবান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আইএস ও তালেবানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। তালেবানের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আফগানিস্তানে আইএস একাধিক ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে। তবে শীর্ষ পর্যায়ের কোনো তালেবান নেতা এই প্রথম আইএসের হামলায় প্রাণ হারালেন।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসে। তাদের শাসনব্যবস্থা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্বীকৃতি পায়নি। তালেবানের শাসনামলে আফগানিস্তান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, মানবাধিকার সংকট এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমের হুমকিতে রয়েছে।
খলিল হাক্কানির মৃত্যু তালেবানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও শাসনব্যবস্থার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তার নিহত হওয়ার ঘটনা তালেবান-আইএস বিরোধকে আরও জটিল ও সংঘাতমুখী করবে।